আমার যাপনের দিনলিপি- দুই।।ক্যাচলার নাম ছাগল পাঘা

ছবি
ক্যাচলার নাম ছাগল পাঘা অমিত মাহাত  কনদিগের লে ঘরকে আলি। মালুম নাই। দমতক ভোখ পাইয়েছিল। আস্যেই সিনান নাহান তোর চুলহায় পুড়ুক,আদকাবরা পা রাখে  নেগা হাতে সাবান নিয়ে যা ডাহিনা হাতটাই  জলটা নিয়েছি। পাড়ায় হুরি উঠল। দু গাবল মুখে পুরেছি। তিন গাবলকে ফুরাবেক। ফৈটকা দিল হাঁকায় - এ বঅ লেখইয়া কাকা! চাঁড়ে আসো, আয়।  আমি শুধালি - ক্যানে রে? কি হইল! -মাঝকুলহিএ বেপক সিন চৈলছে বঅ । লিখবে তো চল্যে আসঅ!  -থাম রে, আর এক গাবল!  ফৈটকা দৌড় মারল। আর আমিও রঁদ বাদাড় ডেঁইঘে মাইনকা'র বাঁশ ঝাড়ে যাঁইয়ে রোগা রুঠুইনা ভুলির সাথে যাকে বলে বজড়। সেইরকম।হামদের পাড়ার লে নামোপাড়া মাঝকুলহি কমটা লয়।  যাচ্ছি, কলমের কাজ করি তো। যা'ই ঘটুক। এক কলম লেখার মসলা হবেই হবে। তাই আর কি, সঁকড়ি হাতে ঘামাঘামি দুশো মিটার দউড়।  কি কান্ড!  ই যে হামার পুটি ঝিএর গলা। দরমুখা বাখানে মুইক্তার শাউড়ির কামান খাবেক নকি রে!  -বলি হেঁ লো, আঁটকুড়ি! আজও তোর রোগনা ছাগলটা ছাড়্যে দিয়েঁছিস? তর ভাতার এতই নিকম্মা!  একটা বরহই অ নাই আর সুতলি অ নাই। নাই তো নাই। একটা পুঁয়াল দড়িও জুটল নাই ! -আজই পুচকিছে দিদি ।বাঁধায় ত ছিল এদ্দিন।  -বাঁধা থাকলে আমার বাঁধনামোর পাকব

খেজুরপাত কুড়চিপাত

বাঁকিবাঁধ গাঁয়েরলে কুলহিমুড়া তক আলে দেখবিস একটা জ্যইড় গাছ আছে। উখিনে দাঁড়ালে দেখবিস পড়াডিহার বাঁকুর বেটাকে। একটা ফোন নি ঘনেক নেগা কানে ঘনেক ডাহিনা কানে ঠেসায় একবার বাঁকিবাঁধ কুলহির দিগে ভালছে ত একবার বনের রাস্তার দিগে ভালছে। আর একলায় বক্যে যাছে। তুই হ'ত ভাববিস, ই শালা! ছানাট খেপাল নকি।

বাঁকুর বেটায় যেই তকে দেখতে পাবেক অমনি উয়ার ফোন ট পাকিটে পুরে লিবেক। আর আটুমাটু খেজুর লাটার আহড় হবেক । তুই ধর বন যাত্যে ছিলিস । ছাগল পালহা আনতে। তুই কি করবিস? নাংসা করে ঘরমুহা হবিস। "থাম নঅ দেখি হামদের পুটিরানী কি করছে। বার হলি খনে ফওনে গুজুর ফউসুর হতে ছিল।এখন অ হছে নকি।

তুই যখন পুটিকে দেখি ঘরলে কুলহিমুড়া তক আসবি।দেখবি, বাঁকুর বেটা আর নাই ।পালাঞ্ছে।তবে আর একটা জিনিষ দেখবি। কি বল নঅ?

দেখবি তিনটা খেজুরপাত। আর দুটা কুড়চিপাত। জ্যইড়তল টাই বাঁকিবাঁধ কুলহির দিগে রাখা আছে। কেনে বল নঅ? নাই পারলিস ধরত্যে। তুই তখন ছাগল ঢাইড়ের কথা ভাবছিস। ঠিক নঅ। গাভিন ঢাইড়। পালহাপাত খাওয়ালে ট্যানকো ট্যানকো ছানা দিবেক। একটা বদা। একটা হাওলান। তাই ন। আর উটা বিকেই টেনকাবার কথা ভাবছিস। হ ন। মরদ টা ত মাতাল । তার উপর পুটি ইবার মাধ্যমিক দিল । জেষ্ঠিমাসে রেজাল হলে পুটি পাস দিবেক।এগার কেলাসে উঠবেক।তা বাদে বার ।তুই মা হঁয়ে যা করলিস। ধুর ইসব কথা এখন আর কেনে ।

শুঁড়ি ডাহিএ নাই হত্যে তুই গেলিস থলবইলার ডাহি। কাছলে গেলিস ধুরকে। দুটা বনুয়া জাম আর এক আঁকাইড় শাল ডাল দাএ রেচ্যে যেই ভাবিলিস ইবার ঘরকে যাব ।তর মনে হল্য থাম দুটা পাত তুলি। পুটির বর লাগলে দেখাশুনায় কুটুম্বাটুম আলে তামুকতুলা দক্তা কিসে দিবিস? পাত নাই হল্যে।
দুটা তুলব বললিস। কিন্ত্যুক পাত তুললিস একচাকি। ভাবলিস থাম দুটা কঁইচড়া পহা-ডাল ভাঁগি। লতা বনাতে হবেক ।নাইলে পরহা কাপড়ে গাঁঠিয়াবি নকি। বঝা  বাঁধেঞ দু পাউড়ি বাড়ালিস,  লে মার দাতন কাঠি ত লি নাই।
-ঝট করতে দেরি হল তর। গেলিস খনে দুপহর হয় নাই। ঘুরলি খনে বেলাঘুরা। আড়বেলি টাইমে পুটি উয়ার ইস্কুলের লীল সাইকেলে দেওরানির বিটি কাঁদরিকে চাপায় ঘুঘি আড়া খালকে যায়। ঠিক ন।

দনক দনক চাইলে ঘরমুহা হঁয়েছিস। বনডভা পাইরাবি পাইরাবি হঁয়েছিস। পা দুটা আঝবাঝাল জানাল তর। দেখ ন পরহা কাপড় টা কৎখিনলে গহলিছে। গহলিলেই বা কি। যে ভালবেক উয়ার লাজ ন যে হাগবেক উয়ার। ঘর পঁহচে দেখলিস ছাগল ঢাইড় ডেহইরে বস্যে পাজ কাটছে। দেখলিস আইনগা ঘর ঝাটাপাট হঁয়েছে। হাঁড়িকুঁড়ি সঁকড়ি কাঁসাও ধুয়াধাকলা।

দুই

ঘুঘি আড়ায় বাঁকুর বেটা কাঁদনের সঁগে যখন পুটির দেখা হল, পুটিএই আগুয়ায় রা কাড়ল। জিগাস করল, হামদের কুলহি মুড়ায় জ্যইড়তলে দুটা কুড়চি পাত আর তিনটা খেজুর পাত তুইহেই তবে রাখ্যেছিলিস।
কাঁদন বইলল -হঁ।
তাবাদে জিগাস করল, তুই জানলি কেমনে?
-হামি দেখিছি।
-কখন বল নঅ।
-কখন আর মাঁই যখন বন যাত্যে ছিল।
-অ।
-অ কি?
-কিছু নাই এমনি।
-এমনি? তঅ তিনটা খেজুর পাত আর দুটা কুড়চিপাত দিবার মানে?
-মানে আর কি। হামি বললি তুই বিকাল পাঁচটার সময় দেখা করবিস।
-অ। হামি ভাবলি। আইজ পাঁচদিন হঁয়ে গেল হামার দেখা পাস নাই।
-তুই যে মামাঘর যাঁয়ে পাঁচদিন থাকবিস। হানাকে ত বলথিস। তাইলে হামিও মসিঘর চল্যে যাথি। উখিনে তুই আর হামি ডুলুং কাতায় বসে বিকালের সুরুজ ডুবা দেখথি। সুরুজ ডুবা রঙে ডুলুং লদি সনা ঝলমল করথ। হামি এক আঁজলা সনা তর দুহাতে দিয়ে বলথি ---
-কী?
-বলথি, আমি তকে সনা দিতে নাই পারব। রূপাও নাই পারব। কিন্ত্যুক
-কিন্ত্যুক কী?
-কিন্ত্যুক হামি সুরুজ ডুবা রঙ দি তর এই সিঁথা রাঁগায় দিব। পলাশ ফুলে ।

কাঁদনকে বেড়ে মিঠা লাগছে পুটির। পুটিকেও।

তিন

তকে ইবার পড়াডিহার কথা বলি। গাঁ হিসাবে বড় লয়। তবে বন ডুবকা কাটি ডাহি বনাঁয়ছে। ডাহিকে বিল। ই গাঁটা ঢের উঁচা গাঁ ।উঁচা মানে ডাঁগা। জলের কস্ট আছে ।ভাতের কস্ট নাই। বন গড়িয়ান পাতপচা জলে পড়াডিহা যে ধানটা ফলায় ।উটা তদের বাঁকিবাঁধ পারবেক নাই। নামেই বাঁকিবাঁধ ।কামের বেলি ফাঁকিবাঁধ। বাঁকিগুঢ়ার বিলটা যেথিন বছরেই ববুলান নামহে । উখিনে ক আঁটি ধান পালিস? গেলবছর?
ইদিগ দি পড়াডিহা বাঁকিবাঁধলে উঁচায়। উপরে।  তা বলে তুই তলমুহা হবিস কিসকে। তুই যে মা।
বাঁকুকে ত দেখিছিস। তিরিশ ঘর মাহাতর মাঝে ইহেই যা নামোয় পড়ে আছে । চাষে খাটে নঅ। টেনকাবেক কুথাকে। বর্ষা হলে চাষ ।নাই হলে হাইনিকাশ। তার উপর ধানের দাম নাই। সার কামিনের দাম হালের দাম মুনিসের দাম জেস্টির খরা বঅললে ফুরাইল। আর ধান জাড়কালের বেলার মতন ।মাথার উপরে উঠছেই নাই । টেনকিবেক কুথাকে। কাঁদন ত পড়ছে । চাষে খাটে নাই ।গেল বছর কাপগাড়ি কলেজে ভর্তি হঁয়েছে। আর বছর পাস দিবেক । কলেজ গেলে রোজ দশ কুড়ি টাকা দিতে হয় । ধান বিকেই উটা আসে ।

তুই তদের ঘরের কথায় বল নঅ। মরদ টা মাতাল। উপজাবেক কি মদ খাঁয়ে ফুটাছে । তুই একা দুটা ছাগল। তিনটা ভেড়া। পাঁচটা খুখড়া আর গটা দশ হাঁস নি ঘনেক বন যাব হছি। ঘনেক বাঁকিবাঁধ হছে ।একবার ছাগল বাগালি ত একবার হাঁসবাগালি ।কেমন জানাবেক? বাঁচতে মন যাবেক? পুটি বড় হছে ।বিহা দিতে হবেক। খাটপালং আলমারি গাঁ গুইঠা ভজ লাখের ধাক্কা।কুথা পাবি। ছাগল খুকড়ায় কত পাবি। পুটির বিহা গেল ।বছর নাই ঘুরতে বিটি পুয়াতি। খরচে খরচ ।ছানার মা হলে সামলাবি কি মটানিকাশ ছাড়বি । একা কতদিগে ঝাঁপাবি।

বকতে যাঁয়ে ঢের রাইত হল। ইবার ঘুমা । উ কথা কি ফুরায়? ন সাগর শুখায়। আর কথা নাই। তর মরদকে দেখ একটা ঠেঙ খাইটে আর একটা ভুঁইয়ে ছড়ায় কেমন হা ফাড়া ঘুম দিছে। মুহে মাছি ঢুকলে গিলে খাবেক মনে হছে ।বমি কর‍্যেছে। বুঢ়াকুনু মুতেওছে। তাও তর কন রাগ নাই ।জ্বলন আছে কিন্তুক জুড়ান নাই ।
এই থুকাম দিলি। ইবার ঘুমা। পুটিও ঘুমাছে। উয়ার ঘরে । রাত জাগছে খেজুরপাতের চাকড়ায় কুড়চি পাতের বর বউ ।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আমার যাপনের দিনলিপি- দুই।।ক্যাচলার নাম ছাগল পাঘা

বাঁদনা পরবের খুঁটিনাটি কথা ঃঃ পর্ব এক

চল হে দুখিয়া